Home সমস্যা ও সম্ভাবনা এক গ্রামেই ৪ বার ভূমি অধিগ্রহণ: নি:স্ব হওয়ার শঙ্কায় দেড় শতাধিক পরিবার

এক গ্রামেই ৪ বার ভূমি অধিগ্রহণ: নি:স্ব হওয়ার শঙ্কায় দেড় শতাধিক পরিবার

by বাংলা টুডে ডেস্ক
৪৫০ views


শুভ্র মেহেদী, জামালপুর:
নদী ভাঙ্গন আর টানা তিনবার ভূমি অধিগ্রহণের মুখে পড়ে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের এক সময়ের বড় গেরস্থরা হয়েছেন প্রায় ভূমিহীন আর বাকিরা হয়েছেন নি:স্ব। সবশেষ বাপ-দাদার রেখে যাওয়া যেটুকু জমি রয়েছে, তাতে কোন রকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই হলেও সেটিও হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধিনে এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন নির্মানের জন্য চতুর্থবার ভূমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নেওয়ায় নি:স্ব হওয়ার শঙ্কায় দেড় শতাধিক পরিবার। গ্রামবাসীর দাবি বাপদাদার কবরের উপর দিয়ে চলাচল করতে দেওয়া হবেনা গাড়ি, তাই সর্বস্বদিয়ে রক্ষা করবেন তাদের শেষ সম্বলটুকু।

তারাকান্দি-ভূয়াপুর রেল লাইন এবং মহাসড়কের পাশে থাকা ছোট ছোট দু’চালা আর ঘুপড়ি ঘরগুলো দেখে বোঝার উপায় নেই এসব ঘরে বসবাসকারি পরিবারগুলোর এক সময় বিঘায় বিঘায় জমি আর বড় গেরস্থলী ছিল। প্রথম দফায় নদী ভাঙ্গনের শিকার হয় পরিবারগুলো। তারপর যমুনা সারকারখানার জন্য বিসিআইসি, তারাকান্দি-ভূয়াপুর রেল লাইন নির্মানের জন্য রেল কর্তৃপক্ষ এবং মহাসড়কের জন্য সড়ক ও জনপথ ভূমি অধিগ্রহণ করলে সরিষাবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের এক সময়ের এই বড় গেরস্থরা হয়ে পড়েন প্রায় ভূমিহীন, আর বেশিভাগ পরিবার সহায়-সম্বল হারিয়ে হয়ে যান নি:স্ব। সব হারিয়ে যেটুটু জমি রয়েছে তাতে কোন রকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই হলেও এখন শেষ সম্বলটুকুও হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে দেড় শতাধিক পরিবার।

জামালপুর সড়ক বিভাগের আওতায় সরিষাবাড়ী-তারাকান্দি-ভূয়াপুর সড়ক উন্নয়নের কাজ করা হচ্ছে। এই সড়ক উন্নয়ন কাজের মধ্যে রয়েছে দুটি এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন নির্মান প্রকল্প। ইতিমধ্যে পোগলদিয়া এবং দৌলতপুর এলাকায় দুটি স্থান নির্ধারন করে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভূমি অধিগ্রহণ হলে পুরোপুরি নি:স্ব হয়ে যাবে দৌলতপুর গ্রামের দেড় শতাধিক পরিবার। সেইসাথে হারিয়ে যাবে বাপ-দাদার ভিটেমাটি আর কবরের শেষ স্মৃতি চিহ্নটুকুও। তাই নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় আন্দোলনে নেমেছে গ্রামের বাসিন্দারা। ভূক্তভোগীদের দাবি বাপ-দাদার ভিটেমাটি আর কবরের উপর দিয়ে গাড়ি চলতে দেওয়া হবেনা, সর্বস্ব দিয়ে রক্ষা করবেন নিজের শেষ সম্বলটুকু।

জামালপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী খায়রুল বাশার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন জানান, এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন নির্মানের জন্য দুটি স্থানের মধ্যে দৌলতপুর এলাকার বাসিন্দারা আপত্তি জানিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে নিয়ে দ্রুতই স্থানটি পরিদর্শন করা হবে এবং স্থান পরিবর্তনের সুযোগ থাকলে তা করা হবে।


জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন নির্মানের ক্ষেত্রে স্থানীয়দের আপত্তি পাওয়ার পর শুনানি করা হয়েছে। সেখানে অনেকগুলো বাড়িঘর পড়বে বলে জেনেছি এবং যাচাই-বাছাই করে যতোটা সম্ভব কম ক্ষতি হয় এ বিষয়ে নতুন করে প্রস্তাব পাঠানো হবে এবং বাড়িঘর বাদ দিয়ে অধিগ্রহণ করা হবে।

জামালপুর সড়ক বিভাগের অধিনে ৩৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে চলছে সরিষাবাড়ী-তারাকান্দি-ভূয়াপুর সড়ক উন্নয়নের কাজ। এতে দুটি এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন নির্মানের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯ কোটি টাকা।

আরো পড়ুন

সম্পাদক: শুভ্র মেহেদী

মোবাইল: ০১৯৮৫৮২৭৮৩০
ই-মেইল: jamalpur.banglatoday.2022@gmail.com

মিডিয়া ক্যাম্পাস, পৌরসুপার মার্কেট (২য় তলা), রানীগঞ্জ বাজার, তমালতলা, জামালপুর।

Developed by Media Text Communications