Home মতামত বাংলা নববর্ষে প্রত্যাশা

বাংলা নববর্ষে প্রত্যাশা

by বাংলা টুডে ডেস্ক
২৩৯ views

জান্নাতুল সিফা
প্রলয় স্বরূপে আবির্ভূত করোনা অতিমারীর অপ্রতিবন্ধ বিস্তার এবং মানবজীবন নিধনের দুঃসহ দৃশ্যপট বিশ্বজুড়ে এক নির্দয় ও ভয়ংকর মনস্তাত্ত্বিক সংকট তৈরি করেছিল। কার্যকর প্রতিরোধ ও মৃত্যুঝুঁকি মোকাবেলায় সচেতনতা-সতর্কতা অবলম্বন এবং পর্যাপ্ত প্রস্তুতি গ্রহণে বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসী ছিল ঐক্যবদ্ধ। অতিমারীর অবর্ণনীয় বিপর্যস্ততায় ক্ষতবিক্ষত ধরিত্রীর সকল নাগরিক মানবিক-অসাম্প্রদায়িক প্রচেষ্টায় নবতর এক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। আবহমান বাংলা ও পরিশুদ্ধ বাঙালীর শাশ্বত সাংস্কৃতিক-ঐতিহ্যিক নববর্ষের অবগাহন রচনা করেছে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির সংযোগ। এই দুর্বিষহ সঙ্কট উত্তরণে সাবলীল প্রাণস্পন্দনের গতি সঞ্চারে নববর্ষ উদযাপন বাঙালী ঐতিহ্য-কৃষ্টির অতুলনীয় প্রাসঙ্গিক অনুষঙ্গ।

জনসমাগমের আনন্দধারার বাহ্যিক পরিবেশ অফুরন্ত প্রাণস্পন্দনে উদ্বেলিত। করোনা মুক্তির জয়গানে বাঙালীর হৃদয়ের গভীরে নববর্ষের দ্যোতনা পরিগ্রহ করেছে চিরন্তন ও নিরন্তর মাঙ্গলিক অপরূপ। প্রকৃত ধার্মিক ও জ্ঞান-যুক্তিনির্ভর সমাজ ইতিহাস অনুধ্যানে যাঁরা চিরস্মরণীয় তাদেরই পথপ্রদর্শন ও চিন্তা-চেতনার নিবিড় অনুধাবনে নববর্ষ উদযাপন কোন দৃশ্যমান আনুষ্ঠানিকতা নয়, চিরায়ত বাঙালী সংস্কৃতি-কৃষ্টি-ঐতিহ্যের অনানুষ্ঠানিক আবাহনও বটে। এর মূলে রয়েছে সত্য-সুন্দর-কল্যাণ ও আনন্দবোধে অনবদ্য জীবনপ্রবাহের ত্রৈলোক্য রূপান্তরের অসাধারণ ব্যঞ্জনা।

নববর্ষের বাংলা সনের ‘সন’ শব্দটি আরবী, পহেলা বৈশাখের ‘পহেলা’ শব্দটি ফারসী এবং বছরের প্রারম্ভে ব্যবসা বাণিজ্যে প্রচলিত ‘হালখাতা’ শব্দটি ইসলামী। হিজরী সনকে অবজ্ঞা করে নয়, পক্ষান্তরে হিজরী ৯৬৩ সালকে তাৎপর্যপূর্ণ মর্যাদায় সমাসীন করার লক্ষ্যে সূর্যকে মানদ- ধরে স¤্রাট আকবর এটিকে সৌরবর্ষ বা ফসলি সনে পরিগণিত করেছিলেন। তারই শাসনকালে সৌর বৎসর (বঙ্গাব্দ) ও চান্দ্রবর্ষকে (হিজরী) এককমাত্রায় নির্ধারণে রাজজ্যোতিষী আমীর ফতে উল্লাহ সিরাজীর সূক্ষ্ম হিসাব-নিকাশ বিবেচনায় শুভক্ষণ গণনার দিন হিসেবে ১ বৈশাখকে নববর্ষ উদযাপনের দিন ধার্য করা হয়।

বর্ষ গণনায় সে সময় প্রতিটি মাসের ৩০ বা ৩১ প্রতিটি দিনের নামও ছিল ভিন্ন ভিন্ন। দুঃখজনক হলেও সত্য, গুটি কয়েক ধর্মান্ধ মৌলবাদী শক্তি বাংলা নববর্ষকে বিশেষ একটি ধর্মের মোড়কে বন্দী করে ধার্মিক মুসলিম সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। প্রাসঙ্গিকতায় উপস্থাপন করা যায় রবিঠাকুরের অমর ‘শিশুতীর্থ’ কবিতার কয়েকটি পঙ্ক্তি। ধর্মের নামে অপপ্রচারণার বিরুদ্ধেই রবিঠাকুর বলেছেন, ‘চলেছে পঙ্গু, খঞ্জ, অন্ধ আতুর,/ আর সাধুবেশী ধর্মব্যবসায়ী,/দেবতাকে হাটে-হাটে বিক্রয় করা যাদের জীবিকা।’

এই প্রসঙ্গে জাতীয় কবি নজরুল তার ‘শা-ারী হুঁশিয়ার’ কবিতায় বলেছেন, ‘অসহায় জাঁতি মরিছে ডুবিয়া, জানে না সন্তরণ,/ কা-ারী! আজ দেখিব তোমার মাতৃমুক্তিপণ।/ ‘হিন্দু না ওরা মুসলিম ?’ ওই জিজ্ঞাসে কোন্ জন ?/ কা-ারী! বল ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মা’র!’ একদিকে ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ক্ষুদ্র সংকীর্ণকতা, অন্যদিকে ব্রিটিশ বেনিয়াদের নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাতীয় কবি সোচ্চার কণ্ঠে উচ্চারণ করেছেন, ‘আর কতকাল থাকবি বেটী মাটির ঢেলার মূর্তি আড়াল?/ স্বর্গ যে আজ জয় করেছে অত্যাচারী শক্তি চাড়াল।/দেব-শিশুদের মারছে চাবুক, বীর যুবাদের দিচ্ছে ফাঁসি/ভূ-ভারত আজ কসাইখানা, আসবি কখন সর্বনাশী?’ ধারাবাহিকতায় নববর্ষ উদযাপন মানবিকতা-ধার্মিকতার অবগাহনে সভ্যতাকে করেছে নন্দিত।

বিপরীতে ধর্মান্ধ, অকল্যাণকর, জীর্ণতা, কূপম-ূকতা, পুরাতন গ্লানি বা কালিমা ইত্যাদির ঘৃণ্য বাহকরা বরাবরই পরাজিত ও নিন্দিত হয়েছে। স্বদেশ মানস রচনায় বাঙালী সংস্কৃতি, কৃষ্টি-ঐতিহ্য সর্বোপরি ইতিহাসের আলোকে রক্ষণশীল ও পশ্চাৎপদ চিন্তা-চেতনাকে পরিহার করে আধুনিক-প্রাগ্রসর অভিধায় জাতিসত্তাকে যথাযথ প্রতিভাত করার সম্মিলিত প্রতিশ্রুতি বাংলা নববর্ষকে দান করেছে অভূতপূর্ব জ্ঞানাঙ্কুর যাত্রাপথ। বিশেষ করে দেশের তরুণ প্রজন্মের উচ্ছ্বাসে ইতিবাচক প্রবাহমানতায় অপসংস্কৃতিকে পরিহার করে সুস্থ বাঙালী সংস্কৃতি-মুক্তির অরিন্দম রাগিণী হিসেবেই গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এই তরুণসমাজই কঠিন মহামারী প্রতিরোধে মনন-সৃজনশীল ও মানবিকতায় পরিপূর্ণ কর্মযজ্ঞ সম্পাদনে তাদের খ্যাতির মার্গশীর্ষ করে তুলেছে।

বাংলার সমাজ ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, বর্তমান ভৌগোলিক সীমারেখা নিয়ে বাংলাদেশ নামক এই অঞ্চলের মানব-গোষ্ঠীর কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ভাষা, সাহিত্য, ধর্ম, চিন্তা- চেতনা ইত্যাদি ইতিহাসের বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে সংমিশ্রণ, সংযোজন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন এবং সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে আজকের অবস্থানে উপনীত হয়েছে। বস্তুত গাঙ্গীয় এ ব-দ্বীপ এলাকায় বাঙালীরা বসবাস শুরু করেন এ অঞ্চলে আর্যদের আগমনের প্রায় পনেরো শ’ বছর আগে।

দ্রাবিড় সভ্যতার অন্তর্ভুক্ত এই জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যের উৎসে ছিল কৃষিভিত্তিক সংস্কৃতি। আর্যদের দখলে আসার পর রাজনীতি, ভাষা-সংস্কৃতি ইত্যাদির বিষয়ে আর্য ও অনার্যদের মধ্যে সংঘাত শতাব্দীর পর শতাব্দী অব্যাহত থাকলেও শ্রী দুর্গাচন্দ্র সান্যালের ভাষায়, ‘বৈদিক যুগ থেকে আর্যরা অনার্য সভ্যতা গ্রহণ শুরু করে।’ মোহাম্মদ আবদুল হাই সঙ্কলিত ও সম্পাদনায় ‘বাঙালীর ধর্মচিন্তা’ গ্রন্থের ভূমিকায় চমৎকারভাবে উপস্থাপিত বিষয়ের অবতারণায় উল্লেখ করেছেন যে, মোগল আমলের বাংলা সমাজ প্রধানত হিন্দু, মুসলমান-এ দুটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত ছিল। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অবস্থান তখন প্রায় অবলুপ্তির পথে। বাঙালী সমাজের এ দুটি সম্প্রদায়ের পরস্পরবিরোধী মৌলিক আদর্শগত বিভাজনটি বিকশিত হয়েছিল ধর্ম, দর্শন, আচার-আচরণ, নিরাকার-আকার, একেশ্বর ও বহুত্তবাদকে কেন্দ্র করে।

এই বিভাজনই প্রকৃতপক্ষে বিরোধ, বিদ্বেষ, হিংসা, প্রতিহিংসা ইত্যাদির যাঁতাকলে এ দুই সম্প্রদায়কে আড়ষ্ট করে রেখেছিল। এ উভয় সম্প্রদায়ের সৃজনশীল গোষ্ঠী কেন জানি মনন-চিন্তনের বেড়াজালে নিজেদের আবদ্ধ করে স্ব স্ব ধর্ম ও সমাজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে সচেষ্ট ছিল। মজার ব্যাপার হচ্ছে, একদিকে ভীষণ ধরনের ব্যবধান সৃষ্টি হলেও প্রাত্যহিক সমাজ জীবনে সহাবস্থান, শ্রেণী চরিত্র, পারস্পরিক লেনদেন, আদান-প্রদান, ইত্যাদি এ দুই সম্প্রদায়কে আবার প্রেম-প্রীতির অভিনব মেলবন্ধনও কর্ণান্তর করেছে।

বাংলাদেশে বাঙালী জাঁতি ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী যেমন- চাকমাদের ‘বিজু’, ত্রিপুরাদের ‘বৈসুক’, মারমাদের ‘সাংগ্রাই’, তংচঙ্গ্যাদের ‘বিষু’, অহমিয়াদের ‘বিহু’ এবং সর্বোপরি পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর বৈসাবি উৎসবের মাধ্যমে বর্ষবিদায় ও বরণ তাদের ঐতিহ্য ও আভিজাত্যকে সামাজিক সংহতি ও ঐক্যের বন্ধনকে সুদৃঢ় রাখার বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে এখনও বরেণ্য ভূমিকা পালন করছে। নিজস্ব বর্ষ পঞ্জিকার সূত্র ধরে নববর্ষের বিভিন্ন উৎসব উদযাপনের মাধ্যমে বংশ পরম্পরায় তারা তপশ্চর্যা সমাদৃত।

বাংলাবর্ষ বিদায় ও নববর্ষের অবগাহন আজ শুধু গ্রাম বাংলায় নয়, বাংলাদেশের প্রতিটি নগর, শহরসহ যে কোন অঞ্চলে এমনকি বিশ্বের নানা দেশে প্রবাসী বাঙালীদের আনন্দ উদ্যাপনের বিশেষ দিন হিসেবেও স্বমহিমায় ভাস্বর। নানামুখী বিভ্রান্তি দূরীকরণে নববর্ষের উৎসসূত্র প্রজন্মের বোধগম্যে আনা একান্ত আবশ্যক। প্রাসঙ্গিকতায় প্রযোজ্য বিশ্লেষণ হচ্ছে- বিশ্বের সপ্তমাচর্যের অন্যতম ‘তাজমহল’ খ্যাত সমাধিসৌধের প্রতিষ্ঠাতা স¤্রাট শাহজাহানই বিভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্রের নামানুসারে পুরো মাসকে সপ্তাহে বিভক্ত করে দিনগুলোর নামকরণ এবং পাশ্চাত্য ক্যালেন্ডারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রোববার কে সপ্তাহের প্রথম দিন হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।

সূর্য দেবতার নামানুসারে রোববার, শিব দেবতার নামানুসারে সোমবার, মঙ্গল গ্রহের নামানুসারে মঙ্গলবার, বুধ গ্রহের নামানুসারে বুধবার, বৃহস্পতি গ্রহের নামানুসারে বৃহস্পতিবার, শুক্র গ্রহের নামানুসারে শুক্রবার এবং শনি গ্রহের নামানুসারে শনিবার রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। অতএব ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত যে, এই বঙ্গাব্দের প্রচলন এবং এই নববর্ষকে বরণ করার যে প্রক্রিয়া বা অনুষ্ঠান তা সকল কিছুই মুসলমান শাসকদেরই সৃষ্ট এবং চিরায়ত বাংলা সংস্কৃতিরই পরিবর্তিত-বিবর্তিত প্রসঙ্গ। এটি শুধু বাঙালীর জাতীয় কৃষ্টিকে সমৃদ্ধ করে না, বাঙালী সমাজের কৃষি ও অন্যান্য আর্থ-সামাজিক প্রতিটি প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকা-কে করেছে নবতর অলংকারে ভূষিত।

বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের সাবলীল ধারণা-বিচ্যুত করে শাশ্বত ঐতিহ্য ও কৃষ্টি চর্চায় বিকৃত মানসিকতার সন্নিবেশ ঘটানোর লক্ষ্যে ধর্মান্ধগোষ্ঠীর অপপ্রচার কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নববর্ষ প্রচলন ও উদযাপনে হিন্দুয়ানি বা হিন্দু সংস্কৃতির যে লেশমাত্র সংশ্লিষ্টতা নেই, এটি অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও সমুজ্জ্বল। মূলত ধর্মান্ধ অপসংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার পুরো বিশ্বকে অশুভ-অন্ধকারের কশাঘাতে জর্জরিত করার বিষয়টি অনুধাবনে ধার্মিকতা-মানবিকতা-ন্যায়পরায়নতা-সত্যবাদিতা-আসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রবহনে বিশ্বময় আধুনিক চিন্তা-চেতনার উন্মেষ ঘটে। এরই প্রেক্ষাপটে অসাম্প্রদায়িকতা বা ধর্মনিরপেক্ষতা প্রত্যয়টির নির্যাসমূলে ছিল ১৮০২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থমাস জেফারসনের ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের অমিয় বার্তা।

তার ডানবুরি ব্যাপ্টিস্টদের কাছে লিখিত চিঠির আলোকে আমেরিকার সংবিধানে সংশোধন সাপেক্ষে ধর্মনিরপেক্ষতা প্রথম প্রতিষ্ঠা লাভ করে। মূলত এই ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের সূচনাপাঠ হয়েছিল ১৭৭৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসী বিপ্লবের বিজয় গাঁথায়। ১৮৪৬ সালে ভাষা ও সাহিত্যে এই ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন ব্রিটিশ লেখক জর্জ জ্যাকব হলিওয়েফ। এর একশত বছর পর ১৯৪৬ সালে এই উপমহাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ শব্দটি রাষ্ট্র চিন্তায় প্রথম ব্যবহার করেন প-িত জওহরলাল নেহরু। যদিও ভারত বিভাগের পূর্বে ও পরে মহাত্মা গান্ধী এই প্রত্যয়টির বহুল ব্যবহার শুরু করেন। পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় প্রকৃষ্ট উপলব্ধিতে মুক্তির মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার।

বাঙালীর ঐক্য-সম্প্রীতি-সৌহার্দ্যরে বর্ণিল প্রজ্ঞার যোগসূত্র ছিল বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ এই ধর্ম দর্শন। এটিই ধর্মনিরপেক্ষতা, এটিই অসাম্প্রদায়িকতা। মোদ্দা কথা- সকল মানব এ কী ¯্রষ্টার সৃষ্ট। এই আত্মঅনুসন্ধান আজ বিশ্ব পরিম-লে নিরন্তর পরিক্রমায় বিশ্ববাসীকে ঐক্যবদ্ধ করে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে মনস্তাত্ত্বিক শক্তি, উদারতা এবং নববর্ষের মতো বৈশ্বিক সম্প্রীতির সমীকরণে নবতর দীপ্যমান বিজয়-অধ্যায় সূচিত করেছে। জয় হোক মানবতার, জয় হোক সম্প্রীতির। ১৯০৭ সালে বিশ্বকবি রবিঠাকুর রচিত কবিতার কয়েকটি পঙ্ক্তির বন্দনা করে বাংলা নববর্ষের ধূসর-দীপিত শুভেচ্ছায় মানব সভ্যতা অব্যাহত করোনাসহ যে কোন অপাঙক্তেয় যুদ্ধে সর্বত্রই জয়ী হোক- এই প্রার্থনাই নিবেদন করছি।

‘বিপদে মোরে রক্ষা করো এ নহে মোর প্রার্থনা,/বিপদে আমি না যেন করি ভয়।/দুঃখ তাপে ব্যথিত চিতে নাই-বা দিলে সান্ত¡না,/দুঃখে যেন করিতে পারি জয় ॥/সহায় মোর না যদি জুটে নিজের বল না যেন টুটে,/সংসারেতে ঘটিলে ক্ষতি, লভিলে শুধু বঞ্চনা/নিজের মনে না যেন মানি ক্ষয়।’ বিশ্ববাসীসহ সকল বাঙালী যেন বাংলা নববর্ষের অসাম্প্রদায়িক বিশ্বজনীন মানবতাবোধকেই এগিয়ে নেয়ার প্রাণশক্তিতে অপরাজিত থাকে, এই প্রত্যাশায় নববর্ষের নিরন্তর শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি সবাইকে।

আরো পড়ুন

সম্পাদক: শুভ্র মেহেদী

মোবাইল: ০১৯৮৫৮২৭৮৩০
ই-মেইল: jamalpur.banglatoday.2022@gmail.com

মিডিয়া ক্যাম্পাস, পৌরসুপার মার্কেট (২য় তলা), রানীগঞ্জ বাজার, তমালতলা, জামালপুর।

Developed by Media Text Communications